টক অব দ্যা শতাব্দী
সাব্বির আহমেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা: খোদ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনিরুদ্দিন আহমেদের মুখে ‘শতাব্দী শতাব্দী’ নাম। আর সহপাঠি ও অন্য ছাত্রীরা তাকে গর্বে গলায় জড়িয়ে ধরছে। আসলেই সে এক সাহসী শতাব্দী। শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী শামসুন নাহার শতাব্দী। তার সাহসের উদাহরণ আরও আছে। কিছুদিন আগে বান্ধবীর বিয়ে ঠেকানোর জন্য সে ক্যান্টনমেন্ট থানায় গিয়েছিলো-স্কুলে তার এক বান্ধবীর মুখেই সেই গল্প শোনা গেলো। আরেক সহপাঠী জানালো,শতাব্দী যে এরকম কিছু একটা করবে এটা মনে করতাম। কিন্তু মন্ত্রীর সামনে সরাসরি গতকাল দাবি তুলে আজ বাস নিয়ে আসলো সেটা বিশ্বাসই হচ্চে না।
রোববার যখন স্কুল ছুটির ঘন্টা বাজলো তখন অন্যদিনের মতো বাসে উঠার দৌড় ঝাক্কি দিতে হয়নি শহীদ রমিজ উদ্দিন স্কুলের ছাত্রীদের। তাদের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর এক ঘোষণাতেই শেওড়া থেকে মহাখালি চালু হয়ে গেলো ‘মহিলা বাস সার্ভিস’। যার সবচেয়ে বেশি সুফল পবে এই স্কুলের শিশু ও ছাত্রীরা।
গতানুগতিক প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নয় সকালে যেমন বাস এসে হাজির। তেমনি দুপুরে বাস দাঁড়িয়ে আছে স্কুলের সামনে।
দুপুরে দু’দফায় বাসটি স্কুল ছাত্রী ও মহিলাদের সেবা দিয়েছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাসটি শেওড়া থেকে মহাখালি চক্কর দিচ্চে মহিলা যাত্রীর খোঁজে।
স্কুল ছুটি শেষে শতাব্দী যখন ফিরছিলো তখন আবার দেখা তার সঙ্গে।
বাংলানিউজকে সে জানায়, ‘মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্যারের কাছে আমি বলছিলাম যে শেওড়া থেকে এমইএস পর্যন্ত বাস কিন্তু সারা দেশের মহিলাদেররই একরম সমস্যা হয়। তাদের বাসে উঠতে যেমন কষ্ট তেমনি সিট না পাওয়ারও কষ্ট।
এজন্য শুধু ঢাকায় নয় সারা দেশেই বিআরটিসির মহিলা বাস সেবা চালু করার দাবি জানায় সে।
কিন্তু বিআরটিসির মহিলা বাস আছে সেটা কি বাড়ানোর দাবি এমনটি জানতে চাইরে সে দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে জানায়, ‘পাঁচ বছর ধরে আমি এই স্কুলে আসি কিন্তু পাঁচ কি ছয়বার মহিলা সাভিসের বাস পেয়েছি। এখন এই পাঁচ বা ছয় কি পাঁচ বছরের জন্য কম নয়কি।
প্রতিদিন বাস পেলে মহিলারা ভালো চাকুরীর জায়গায় যেতে পারবে আর টাইম ম্যানেজমেন্টটাও করতে পারবে-বলছিলো শতাব্দী।
শতাব্দীর সাহসিকতায় মুগ্ধ শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ছাত্রছাত্রী। বাসে ফেরার সময় শিক্ষাররিা মন্ত্রী ধন্যবাদ জানাচ্ছিলেন।
এক সহপাঠী এসময় শতাব্দীর প্রশংসা করে জানায় , কিছুদিন আগে গণিত পরীক্ষার আগের দিন তাদের এক সহপাঠির বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। তখন শতাব্দী সহ তার ছয় বান্ধবী ১০৯২১ নাম্বারে ফোন দিয়ে সাহায্য চেয়েছিলো। এরপর নিদেশনা পেয়ে ছুটে গিয়েছিলো ক্যান্টনমেন্ট থানায়। যে কারণে তাদের ওই সহপাঠির অল্প বয়সে বিয়ের হাত থেকে রক্ষা পায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৬
এসএ/
No comments:
Post a Comment