Tuesday, April 19, 2016

লোকে চেনে ‘শতাব্দীর বাস’ 

সাব্বির আহমেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বাস দেখলেই এখন লোকে চেনে-এটি ‘শতাব্দীর বাস’। মহিলা সার্ভিস নামে আরেকটি বাস এই রোডে চলছে, কিন্তু এই বাসটি শতাব্দীর বাস নামেই যাত্রীদের কাছে পরিচিত। যদিও বাসের সামনে লেখা ‘মহিলা বাস সার্ভিস’। বাসটি এখন এত পরিচিত যে, বাসের অবস্থান জানতে ছাত্রী ও নারীরা চালকের নাম্বারে ফোন করছেন।




বাস শুরুর পর ৩৭তম দিনের সকালে একথা বললেন বাসের চালক আব্দুল মান্নান।



মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) ঠিক সকাল সাড়ে ৬টায় ছাত্রীবোঝাই বাসটি যখন ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন বাসের সব ভাড়া নিজেই সংগ্রহ করে এনে চালকের হাতে তুলে দিচ্ছে শতাব্দী।

এরপর বাংলানিউজকে শতাব্দী জানায়, শুরুর পর থেকে একদিনও বাস আসতে মিস করেনি। দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে আসা যাওয়ার করতে তাদের যে সমস্যা ছিলো এখন তা নেই। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন সকালে সড়কে আসা মাত্রই বাস পাচ্ছে। সকাল সোয়া ৬টা থেকেই শতাব্দীর এই বাস শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।

বাসের চালক জানান, শুরুতে যে বাস দেয়া হয়েছিলো তার সিটগুলো ছিলো শক্ত। সপ্তাহ দুয়েক পর বাস পরিবর্তন করে এই বাসটি দেয়া হয়েছে। এতে ফোমের ৪৫ সিট আছে। বিআরটিসির জোয়ারসাহারা ডিপোর মধ্যে এটি সেরা বাস।

সারাদিনে ৬ থেকে ৭ বার শেওড়া থেকে মহাখালী পর্যন্ত এই বাসটি নারী যাত্রীদের সেবা দিয়ে থাকে।

সকালে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দেয়ার পরপরই বাসের চালকের মোবাইলে একজন যাত্রীর ফোন আসে। ফোন রেখে চালক জানান, কুড়িল থেকে একজন নারী যাত্রী ফোন দিয়েছেন। এখনই যেতে হবে।

চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাসটি এতই পরিচিত হয়েছে যে এই সড়কের নিয়মিত নারী যাত্রীরা চালকের মোবাইল নাম্বারটি সেভ করে রেখে দিয়েছেন। এজন্য বাসের অবস্থান জানতে তার কাছে বারবার ফোন আসে।


গত ১২ মার্চ বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনে যখন ফিটনেসবিহীন বাস ও মিটার ছাড়া সিএনজির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, তখন বাস না পেয়ে হেঁটে হেঁটে বাসায় ফেরার পথে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী শতাব্দীর প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি।

সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিয়ে মন্ত্রী বাস চালুর নির্দেশ দেন। এরপর থেকে প্রতিদিন শেওড়া থেকে মহাখালী পর্যন্ত চালু হয় বিআরটিসির বিশেষ এই বাস সেবা। তখন থেকে অনেকটা অবসান ঘটে এই সড়কের নারী ও স্কুল শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের। এর আগে গাড়ি না পেয়ে দেরিতে স্কুলে যাওয়া অথবা ঝুঁকি নিয়ে রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে স্কুলে যাওয়া ছিলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ঘটনা।

শতাব্দীদের বাস ছাড়াও ওই ঘটনার দু’দিন মন্ত্রী এই সড়কে বন্ধ থাকা আব্দুল্লাহপুর-মতিঝিল মহিলা বাস সার্ভিস বাসটিও চালু করে দেন। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বিআরটিসির ১৯টি বাস নারী সার্ভিস হিসেবে চলাচল করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৬
এসএ/জেডএম

(প্রথম প্রকাশ বাংলানিউজে) https://www.youtube.com/watch?v=tL38IbQrC5o


No comments:

Post a Comment